![]() |
MAHSA International School, malaysia |
দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য খুব ভালো কোন ব্যবস্থা নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনরকমভাবে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের ফেরি করলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কসাইয়ের ভূমিকায় ছিড়ে খাচ্ছে স্বপ্নধারীদের সফলতার আশা। সরকারিভাবে তেমন কোন মনিটরিং না থাকায় পাশোনার মান বিশ্ববাজারে শূণ্যের কোটায়।
আবার আসন সংকটের দরুন এডমিশান নামক ছাটাই প্রকৃয়ার কারণে স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে হাজারো মেধাবীর।
দেশের বাইরে আসার আগে স্বদেশের করুণ অবস্থা কখনোই উপলব্ধি হয়নি। কারণ আমাদের দৃষ্টিটা প্রসারিত করার কোন সুযোগ ছিলো না। ভাবতাম আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা বোধহয় এমনই।
যখন বিশ্বের আরো বিশ-ত্রিশটি দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে একই ক্যাম্পাসে স্বপ্নের উচ্চশিক্ষা শুরু করলাম তখন গিয়ে উপলব্ধি হলো কোথায় পড়ে আছে আমার স্বদেশ। কেউ কিছু ভাবতো না শিক্ষার মান নিয়ে। সর্বশেষ গত দু'মাস ধরে ঢাবির র্যাংকিং নিয়ে মিডিয়ায় প্রতিবেদন আসার পর কিছুটা আলোচনা শুরু হয়েছে। তাও কোন সমাধানের পথ পাবার ক্ষীণ আশাও দেখা যাচ্ছে না।
একটি বিশ্ববিদ্যালয় যাকে আমরা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে নাম দিয়েছি সেখানে নেই কোন বিদেশি শিক্ষার্থী!! একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সেটা কতোটা লজ্জার তা বুঝে আসবে ভিন্ন কোন উন্নত দেশে গেলে এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শতকরা ৫০-৬০ ভাগ বিদেশী শিক্ষার্থীদের সাথে একই ক্যাম্পাসে উঠাবসা করলে।
দেশীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময়ই একটি ব্যাথা কাজ করতো। কেন তারা এতোটা পরিশ্রমের পরও বিশ্বমানের পড়াশোনা পাচ্ছে না। অথচ চাইলেই তারা উন্নত বিশ্বে পাড়ি জমাতে পারে স্বপ্নকে হাতছুঁয়ে দেখার জন্যে।
একবুক ব্যাথা নিয়ে নিজের ছোট্ট পরিসর থেকে চেষ্টা চালালাম কিভাবে সুযোগগুলো আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের হাত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া যায়। বিভিন্ন পত্রিকায় টুকটাক লিখতে লাগলাম এবং পাশাপাশি সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় মিডিয়া ইউটিউব ও ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপের মাধ্যমে এডমিশান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি লিখতে লাগলাম।
আমার চেষ্টার ফল পেতে শুরু করলো শিক্ষার্থীরা। গত পাঁচটি মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী আমার হাত ধরে উচ্চশিক্ষার জন্য নতুন দিগন্তে পাড়ি জমালো। যাদের প্রত্যেকে নিজে এমনকি পরিবার সহ প্রায় সময়ই ফোন দিয়ে এমন বিনম্রচিত্তে কৃতজ্ঞতা জানায় যা আমার নিজেকেই অপ্রস্তুত অনুভূত হয় সত্যিই কি আমি বড় কিছু করতে পেরেছি নাকি।
আমার চেষ্টার মূল্যায়ন শুধুমাত্র শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলেই সীমাবদ্ধ রইলো না বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অফিসিয়াল সনদ দিয়ে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা করে পুরস্কৃত করলো বাংলাদেশের এই নগণ্য শিক্ষার্থীকে।
সর্বশেষ নিজের বাবা মা, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের দোয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকনির্দেশনায় নতুন কিছু শুরু করতে যাচ্ছি। যেহেতু নিজে একজন কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী, তাই শিক্ষা এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরুর কাজ হাতে নিয়েছি যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ সহ বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ আরো সহজ হওয়ার পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিকায়নের নতুন দিগন্ত শুরু হবে ইনশাল্লাহ।
লেখক: শিক্ষার্থী। মাহশা ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া।
![]() |
বশির ইবনে জাফর |
0 মন্তব্য