সুন্নতে নববীর অনন্য উপমা ছিলেন মাওলানা। ছোট থেকে ছোট সুন্নতের সুশৃঙ্খল অনুসরণ ছিল তার শরীরের / স্বভাবের অংশ। সহজাত ধীরস্বভাব, নরম মেজাজ, উদ্যোগী।আল্লাহর অনুগ্রহ, নিজ চেষ্টা ও আগ্রহে কাপড় শেলাইয়ের দোকান থেকে বালিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনার জন্য গিয়েছেন। কাধে কাধ মিলিয়ে গড়েছেন আজকের "আশরাফুল উলুম বালিয়ার" ভিত্তিপ্রস্তর। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মাওলানা ফয়জুর রহমান রহ. (বড় হুজুর) কে। মধ্যম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা শেষ করে চলে এসেছেন বড় কাটারা মাদ্রাসায়। এখানে সাথী হিসেবে পেয়েছেন শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. কে। শুষ্ক রুটি আর পানিকে সম্বল বানিয়ে নিজের ইলমের পিপাসা মিটানোয় ব্যস্ত থেকেছেন সবসময়। দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করার পর আধ্যাত্মিক ক্ষুধা নিবারনের জন্য চলে আসেন "থানা ভবনে" হযরত জাফর আহমদ উসমানী রহ. এর সান্নিধ্যে এবং ইজাজত প্রাপ্ত হোন।
ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী মুনশি বাড়ীতে মাওলানার জন্ম। মুসলিম মধ্য এশিয়া থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্যেশে বাঙ্গাল মুলুকে এসে ভিটে গাড়েন মাওলানার পূর্বসূরি জনাব আব্দুল কাদের রাহ. মাত্র ছয় বছর বয়সে মাওলানা ইয়াতিম হন। ধুতি পরতে হবে বলে স্কুল ত্যাগ করেন ছোট বেলায়।
ইসলামের আমলি দাওয়াত দেশময় ছড়িয়ে দিতে তরুন মাওলানা তাবলীগের মাক্ববুল একটা জামাত নিয়ে দেশব্যাপী পায়দল সফর করেন। সফর শেষে মাওলানা মঞ্জুরুল হক রহ. কে সাথে থেকে প্রতিষ্ঠা করেন ময়মনসিংহের প্রাচীন মাদ্রাসা "দারুল উলুম জামিয়া ইসলামিয়া " চরপাড়া। কর্মজীবনের প্রথম এবং শেষ সময়টা এই প্রতিষ্ঠানেই কাটান। বড় একটা সময় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হিসেবে কাটান। অবসরের পর জামিয়ার সদরুল মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অসুস্থ হওয়া পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, রিজওয়ান খান, মুহিব খান, মুহাম্মদ মুস্তাগিস বিল্লাহ ও সাকিব মুস্তানসির প্রমুখ মাওলানার বড় মেয়ের ও ছেলের দিকের নাতি ।
১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর নিভৃতচারী ক্ষণজন্মা এই সাধক মহান রবের ডাকে সারাদেন। আল্লাহ মাওলানাকে জান্নাতে সুউচ্চ মাক্বাম দান করুন।
0 মন্তব্য