এম.কাউছার মাহদী:হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :-তামাদ্দুন২৪ডটকম
ঐতিহাসিক তরফ পরগনার কথা অনেকেই জানেন -হবিগঞ্জের বাহুবল, চুনারুঘাট ও হবিগঞ্জ সদরের কিছু অংশ নিয়ে তরফ পরগনার অবস্থান ছিল। ১৩০৩ সালে সুফি-সাধক হযরত শাহ জালাল (রহঃ) বর্তমান বাংলাদেশ’র সিলেটে আগমন করেন। তখন সিলেটে রাজত্ব করতেন অত্যাচারি হিন্দু রাজা গৌর-গবিন্দ্র। হযরত শাহ জালাল, সিপাহ-সালার নাসির উদ্দিন ও সিকান্দর শাহ কে নিয়ে সিলেটে আসলে অত্যাচারি রাজা গৌর-গোবিন্দ্র পালিয়ে যায়। ফলে প্রায় বিনারক্তপাতেই সিলেট বিজয় হয়। পরে সিকান্দর শাহকে সেখানকার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করে সিপাহসালার নাসির উদ্দিন কে তরফ পরগনায় পাঠিয়ে দেন। এই ঐতিহাসিক তরফের ভিবিন্ন তথ্য উপস্থাপন করায় তাকে তরফরত্ন উপাধি দেওয়া হয়। সম্প্রতি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলের এই প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ আব্দুল্লাহ। তাঁর চিকিৎসায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস , তাঁর বইয়ের বিশাল ভাণ্ডার সংরক্ষণের জন্য একটি সংগ্রহশালা স্থাপন এবং তাঁর রচিত ‘সিলেটে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটি বাহুবল শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশেরও আশ্বাস দেন বাহুবল উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব আয়েশা হক।
১ নভেম্বর রাতে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার উত্তরসূর গ্রামে প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও শিক্ষক সৈয়দ আব্দুল্লাহ’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে উপরোক্ত আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হক ।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ দীর্ঘদিন যাবৎ দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তিনি তার উত্তরসুরের বাড়িতে আছেন। উক্ত সৌজন্য সাক্ষাতের সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান, বাহুবল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুর রব শাহিন এবং পুটিজুরী এস.সি.উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক পংকজ কান্তি গোপ।
আলাপকালে সৈয়দ আব্দুল্লাহ জানান, বহু ভাষাবিদ পন্ডিত সৈয়দ মুজতবা আলীর পৈতৃক নিবাস বাহুবল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামে। বাংলা একাডেমির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মুজতবা আলীর বড় ভাই সৈয়দ মুর্তজা আলীর লেখা ‘আমাদের কালের কথা’ গ্রন্থে এ বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের তরফের উত্তরসুরের বাড়িতে উৎকৃষ্ট লিচুর গাছ ছিল।
ইউএনও আয়েশা হক বলেন, ‘বহু ভাষাবিদ পন্ডিত মুজতবা আলী আমাদের অহংকার। বাহুবলের প্রয়োজনে ‘সৈয়দ মুজতবা আলীকে ব্রেণ্ডিং করতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ শিক্ষকতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যচর্চা করছেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৫টি। তিনি কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কিছু পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। পেনশনের টাকা দিয়ে সম্পত্তি না করে বই প্রকাশ করে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে পথিতযশা এই সাহিত্যিকের চিকিৎসার ব্যয়ভার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তাঁর পরিবার।
0 মন্তব্য