তামাদ্দুন ২৪ ডটকম:
সাঁতারের মূল্য তারাই বুঝে যারা সাঁতার জানে না। ছোট্রবেলা সাঁতার জানতাম না বলে তিনতিনবার পুকুরে ডুবে পেটভর্তি পানি খেয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আল্লাহর রহমতে বেঁচে এসেছিলাম।একেবারে পানির নিচে চলে গিয়েও কিভাবে হাতরে উঠে এসেছিলাম, সেই দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে। যদিও ভয়ে বাসায় এসে কাউকে বলিনি। তবে তারা সবাই ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন।
পরে অবশ্য সুযোগ পেয়ে সাঁতার শিখে নিয়েছিলাম।
শ্রদ্ধেয় উস্তাদ মুফতী শামছুল ইসলাম জিলানী প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লাস্থ মাদরাসায়ে আশরাফিয়ায় পড়াকালীন একবার বেশ কিছুদিন মাদরাসায় বিদ্যুৎ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পানি ছিলো না বিধায় ভিক্টোরিয়া কলেজ সংলগ্ন রাণী দিঘীতে আমাদের গোসলের সুযোগ হয়েছিলো। সে সময় সহপাঠী সালাহউদ্দীন ও ফরহাদ ভাইদের সহযোগিতা ও ব্যক্তিগত আগ্রহের ভিত্তিতে সাঁতার শিখে নেয়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো। এখানে এসে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ যা করেন বান্দার মঙ্গলের জন্যই করেন যদিও সেটা প্রাথমিক তিক্ত ও বিরক্তিকর মনে হয় আমাদের কাছে।
সিঁড়িতে বসে বসে মগের সাহায্যে পুকুর থেকে পানি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্থ অসহায় বাচ্চারমতো বন্ধু যায়েদ আব্দুল্লাহ’র গোসল করার সেই দৃশ্য এখনো মনে পড়ে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বন্ধুদের সহযোগিতায় সাঁতার শিখে নিয়েছিলাম বলে অসহায় মানুষের তালিকা থেকে বের হতে পেরেছিলাম। এখনো মাঝে মাঝে ভাবি যদি তখন মাদরাসায় পানি থাকতো, বৈদ্যুুতিক সমস্যা তৈরি না হতো তাহলে মনে হয় আজ অব্দি আমার সাঁতার শেখা হতো না। নিজের কাছে নিজে সারাজীবন অসহায় হয়ে থাকতাম। এই অসহায়বোধ উপলব্ধিতে এসেছে কয়েকজন সাঁতার না জানা মানুষের সাথে কথা বলে।
এতকিছু বলার উদ্দেশ্য হলো, করোনাকে শুধু আজাব মনে করলে আমরা ভুল করবো, করোনা আমাদের জন্য রহমতও বটে। কারণ। এই করোনা আমাদেরকে খুব সুচারুভাবে শিখিয়েছে আগামীর দিনগুলো কিভাবে সচেতনতার সাথে কাটাতে হবে। সময়ের মূল্য কিভাবে দিতে হবে। সুসময়কে কিভাবে কাজে লাগাতে হবে। পরনির্ভরতা থেকে কিভাবে নিজেদের কাটিয়ে উঠতে হবে। সময়ের সদ্ব্যবহার কিভাবে করতে হবে। এছাড়াও করোনা আমাদের শিখিয়েছে বিপদে কিভাবে ধৈর্যধারণ করতে হবে, কিভাবে অভ্যস্ত হতে হবে ইবাদত-বন্দেগীতে। চাইতে হবে তার কাছে যিনি সকল সৃষ্টির একমাত্র স্রষ্টা ও সকল প্রাণীর একমাত্র রিজিকদাতা।
মাঈনুদ্দীন ওয়াদুদ
সম্পাদক ও প্রকাশক
তামাদ্দুন ২৪ ডটকম
0 মন্তব্য